ইসলাম মানবতার ধর্ম।আর মানবতার কল্যাণে ইসলামের প্রতিটি বিধান প্রবর্তনের এর ক্ষেত্রে বিশেষ হেকমত রয়েছে। অনুরূপভাবে ইসলামে যাকাতের বিধান অন্যতম হেকমত রয়েছে।
আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ
অর্থ: আর ঈমানদার পুরুষ ও নারী একে অপরের অভিভাবক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাকে। নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং যাকাত দেয় ।
عن عبد الله بن ثعلبة بن صُعَير عن أبيه، قال: قام رسولُ الله – صلَّى الله عليه وسلم – خطيباً، فأمر بصَدَقةِ الفطرِ صاع تمرٍ، أو صاعِ شعيرٍ، عن كُلِّ رأس
আব্দুল্লাহ ইবনে সাআলাবা তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তাঁর পিতা বলেন, রাসুল সা. খুতবা দিতে দাড়ালেন। অতপর প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য এক ‘সা’ খেঁজুর অথবা এক ‘সা’ যব সদকায়ে ফিতর হিসেবে দিতে নির্দেশ দেন।
সুতরাং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ মতে, যাকাত আমাদের উপর অবশ্য পালনীয় এক বিধান। নিচে যাকাত আদায়ের হেকমত নিয়ে আলোচনা করা হলো।

১ যাকাত আদায়ের মধ্য দিয়ে বান্দর আত্মিক পবিত্রতা লাভ করে।
২ .যাকাত আদায়ের সম্পদ বৃদ্ধি ও পবিত্র হয়।
৩.ধনীদের সম্পদ দরিদ্র বঞ্চিত অধিকার প্রতিষ্ঠা।
৪.অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দরিদ্র বিমোচন হয়।
৫. ধনী দরিদ্রের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ সেতুবন্ধন করে তোলে।
৬.যাকাত ধনী গরিবের বৈষম্য দূর করে।
৭.যাকাত প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা হয়।
৮.অর্থনৈতিক সফলতা লাভের অন্যতম মাধ্যম যাকাত।
৯.সমাজ ও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হয়।
১০.যাকাত আদায়ের ফলে সম্পদ কমে না বরং বৃদ্ধি পায়।
১১.রাষ্ট্রীয় সমাজের বিশৃঙ্খলা দূরীভূত হয়।
১২.সমাজ ও রাষ্ট্রের অভাব অনটন দূর হয়।
১৩.এতে ধর্মীদের পাশাপাশি গরিব লোক সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
১৪.যাকাত দাতার সামাজিক অবস্থা সৃষ্টি হয়।
১৫.যাকাত মানুষের লোভ-লালসা নিবারণ করে।
১৬অভাবমুক্ত ইসলামী সমাজ গড়ে সম্ভব।
১৭.যাকাত প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্ট পরকালে মুক্তির পথ উন্মোচন করা সম্ভব হতে পারে।
যাকাত ইসলামের অর্থব্যবস্থার মধ্যমণি অর্থনৈতিক বন্টন ও উন্নতি ভারসাম্য স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে যাকাতের ভূমিকা অনেক পরিমাণ মালিক হলে যাকাত দিতে হবে। কেননা আল্লাহর রাসূল আমাদেরকে সতর্ক করেছেন।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ اتَاهُ اللّهُ مَالًا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَه مُثِّلَ لَه مَالُه شُجَاعًا أَقْرَعَ لَه زَبِيْبَتَانِ يُطَوَّقُه يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ – يَعْنِىْ بِشِدْقَيْهِ – يَقُولُ: أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ». ثُمَّ تَلَا هذِه الْايَة: ﴿وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ يَبْخَلُوْنَ بِمَا اتَاهُمُ اللّهُ مِنْ فَضْلِه﴾. [آل عمران 3 : 180]. إِلى اخر الْايَة. رَوَاهُ البُخَارِيُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন,রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন,অথচ সে ঐ ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করেনি,সে ধন-সম্পদকে ক্বিয়ামাতের দিন টাকমাথা সাপে পরিণত হবে। এ সাপের দু’চোখের উপর দু’টি কালো দাগ থাকবে (অর্থাৎ বিষাক্ত সাপ)। এরপর ঐ সাপ গলার মালা হয়ে ব্যক্তির দু’চোয়াল আঁকড়ে ধরে বলবে,আমিই তোমার সম্পদ,আমি তোমার সংরক্ষিত ধন-সম্পদ। এরপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন,অর্থাৎ “যারা কৃপণতা করে,তারা যেন মনে না করে এটা তাদের জন্য উত্তম বরং তা তাদের জন্য মন্দ। ক্বিয়ামতের দিন অচিরেই যা নিয়ে তারা কৃপণতা করছে তা তাদের গলায় বেড়ী করে পরিয়ে দেয়া হবে”। (সূরাহ্ আল ‘ইমরান ৩ : ১৮০) আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
সহীহ : বুখারী ১৪০৩,